গঠনতন্ত্র

অনুচেছদ: ২৭

নির্বাচন পদ্ধতি এবং বিধি

ক) ক্লাবের স্থায়ী সদস্যরা দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভার নির্বাচন পর্বে সংশ্লিষ্ট বিধি মোতাবেক তাঁদের মধ্য থেকে ‘ব্যবস্থাপনা কমিটি’ কর্মকর্তা এবং কার্যকরী সদস্যগণকে নির্বাচিত করবেন। কোনো সদস্য একই পদে কর্মকর্তা বা কার্যকরী সদস্য হিসেবে পর পর দুবার দায়িত্ব পালন করলে তিনি তৃতীয় দফায় ওই পদে আর প্রার্থী হতে পারবেন না । তবে অন্য কোনো পদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে বাধা থাকবে না। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ দু’টি পদে ইচ্ছে করলে কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। তবে একটির বেশি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

খ) ১. পদত্যাগ, অসুস্থতা, মৃত্যু অথবা অন্য কোনো কারণে ক্লাবের সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদকের পদ যদি শূন্য হয় এবং উক্ত শূন্যতা সৃষ্টির সময় থেকে পরবর্তী দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের সময়ের মধ্যকার ব্যবধান যদি ছয় মাসের কম হয়, তাহলে কমিটির অবশিষ্ট কার্যকালের জন্য সিনিয়র সহ-সভাপতি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে এবং যুগ্ম-সম্পাদক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করবেন। বিভাগীয় সম্পাদকদের ক্ষেত্রে এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তা যদি পরবর্তী দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের সময়ের মধ্যকার ব্যবধান ছয় মাসের কম হয় তাহলে কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে কমিটির যে কোনো সদস্যকে ঐ পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য মনোনীত করবেন।

২. কিন্তু উপর্যুক্ত কারণে সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদকের পদ শূন্য হওয়ার সময় থেকে পরবর্তী দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের সময়ের মধ্যকার ব্যবধান যদি ছয় মাস কিংবা তারও বেশি হয় তাহলে উক্ত যে কোনো পদ শূন্য হওয়ার দিন থেকে পঁয়তাল্লিশ (৪৫) দিনের মধ্যে ক্লাবের স্থায়ী সদস্যরা নির্বাচন বিধি মোতাবেক ব্যালটের মাধ্যমে ক্লাবের নতুন সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করবেন।

৩. শূন্যপদে কমিটির কোনো কর্মকর্তা নির্বাচন করতে চাইলে তাঁকে তফসিল ঘোষণার আগে কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে পদ শূন্য হবে সে পদেও একই তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গ) কমিটি তাঁদের প্রথম সভায় একটি নির্বাচনী কমিটি ঘোষণা করবেন এবং ঐ নির্বাচনী কমিটি পরবর্তী দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন এবং এ অনুচ্ছেদের খ-২ উপ-অনুচ্ছেদে বর্ণিত নির্বাচন পরিচালনা করবেন। একজন কমিশনার ও চারজন সদস্য নিয়ে পাঁচ সদস্যের নির্বাচনী কমিটি (সংশ্লিষ্টদের সম্মতিতে) গঠিত হবে।

নির্বাচনে কমিশনার প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনী কমিটির কোনো সদস্য পদত্যাগ করতে চাইলে দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রকাশের তারিখ থেকে তিন দিনের মধ্যে লিখিতভাবে কমিটির সভাপতি বরাবরে পদত্যাগপত্র পেশ করতে হবে। এ রূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হলে কমিটি বিশেষ জরুরি সভা ডেকে নির্বাচনী কমিটির শূন্যপদ পূরণ করবেন।

নির্বাচনী কমিটির কোনো সদস্য কমিটির কোনো পদে নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন নির্বাচনী কমিটির কোনো সদস্য অসুস্থতা অথবা অন্য কোনো কারণে দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে বা অনুপস্থিত থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচনী কমিটির অবশিষ্ট সদস্যরা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন মনে করলে একজন/দুজনকে কো-অপ্ট করতে পারবেন ।

ঘ) নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসারে নির্বাচন হবে:

স্থায়ী সদস্যরা নিম্নবর্ণিত শর্তসাপেক্ষে পরবর্তী ভোটার তালিকাভুক্ত হবার অধিকারী হবেন।

১. নোটিশ বোর্ডে ভোটার তালিকা টাঙানোর ২ মাস আগে পর্যন্ত যে সব সদস্যের মাসিক চাঁদাসহ ক্লাবের খেলাপিসহ বকেয়া পরিশোধিত থাকবে, কেবল তাঁদের নামই ভোটার তালিকাভুক্ত হবে।

২. দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ৪৫ দিন আগে সাধারণ সম্পাদক ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদিত ভোটার তালিকা ক্লাবের নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেবেন।

৩. নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়া তালিকায় কোনো কারণে কোনো সদস্যের নাম বাদ পড়লে এবং যদি সংশ্লিষ্ট সদস্যের মতে তিনি ভোটাধিকার পাওয়ার যোগ্য হন, সে ক্ষেত্রে তিনি তালিকা টাঙানোর তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে লিখিত আপত্তি পেশ করতে পারবেন এবং ব্যবস্থাপনা কমিটি জরুরি সভা আহ্বান করে তাঁর আবেদনের নিষ্পত্তি করবে। কমিটির সিদ্ধান্তের ওপর সংশ্লিষ্ট আপত্তিকারী সন্তুষ্ট না হলে তিনি কমিটির মাধ্যমে দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভার কাছে লিখিতভাবে আপিল করতে পারবেন।

৪. কেবল ভোটার তালিকাভুক্ত সদস্যরাই নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। তবে, অত্র অনুচ্ছেদ (ঘ)-৩ বর্ণিত ধারা অনুযায়ী কোনো সদস্যের আপিলের রায় যদি দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় তাঁর পক্ষে যায় তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে ভোটার তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং তিনি শুধুমাত্র ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।

৫. উপ-নির্বাচনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতকৃত ভোটার তালিকা প্রযোজ্য হবে।

ঙ) ১. নির্বাচনী কমিটিকে ব্যবস্থাপনা কমিটি নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত তারিখের কমপক্ষে বিশ (২০) দিন আগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব প্রদান করবে।

    ২. নির্বাচনী কমিটি সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়ন করবে এবং মনোনয়নপত্রের সঙ্গে তা সরবরাহ করবে। আচরণবিধি অমান্য করার ক্ষেত্রে  প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিধানের উল্লেখ থাকতে হবে। আপত্তি শুনানীক্রমে প্রার্থীতা বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচনী কমিটির ওপর ন্যস্ত থাকবে।

   ৩. দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের দশ দিন আগে (সাপ্তাহিক ও সব সরকারি ছুটির দিনসহ) তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র প্রদান, গ্রহণ, বাছাই, খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ, প্রার্থীতা প্রত্যাহার ও চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ইত্যাদি কার্যক্রম নির্বাচনী কমিটির ওপর ন্যস্ত থাকবে।

 ৪. (১) নির্বাচনী কমিটি মনোনয়নপত্র তৈরি করবে। মনোনয়নপত্রের ছকে প্রার্থীর নাম, স্বাক্ষর, ভোটার  নম্বর, পদের নাম, প্রস্তাবক ও সমর্থকের নাম, স্বাক্ষর, ভোটার নম্বর ইত্যাদি সংযুক্তির বিধান অবশ্যই থাকবে।

     (২) মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার সময় এ উদ্দেশ্যে রক্ষিত খাতায়, সংগ্রহকারী সদস্য তাঁর নাম লিপিবদ্ধ করে সই করবেন। নির্বাচনী কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য প্রদানপূর্বক তিনি ক্লাবের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন।

 ৫.  চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর কোনো প্রার্থীর মৃত্যু হলে উক্ত পদে নির্বাচন স্থগিত থাকবে। পরবর্তী ৪৫ দিনের মধ্যে ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক গঠিত নির্বাচনী কমিটির অধীনে উক্ত পদের জন্য নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।

৬. নির্বাচনী কমিটি নির্বাচনের পর পরই নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত যাবতীয় আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং

সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ব্যবস্থাপনা কমিটিকে বুঝিয়ে দেবে।

চ) প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে সব নির্বাচনই গোপন ব্যালটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। ভোট সমসংখ্যক হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের জন্য সাত দিনের মধ্যে পুনরায় নতুন করে ব্যালট ভোটের ব্যবস্থা করা হবে। দ্বিতীয়বারও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা সমসংখ্যক ভোট পেলে নির্বাচনী কমিটির সদস্যরা গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ করবেন। এতেও ভোটের সংখ্যা সমান হলে তৃতীয় দফায় লটারির মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করবেন। তবে উল্লিখিত প্রথম এবং দ্বিতীয় উভয় ক্ষেত্রে (সমসংখ্যক ভোটের ক্ষেত্রে) কোনো প্রার্থী/প্রার্থীরা কোনো একজন প্রতিদ্বন্দ্বীর পক্ষে স্বেচ্ছায় স্বীয় প্রার্থীতা প্রত্যাহার করলে ওই প্রতিদ্বন্দ্বীকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।

ছ) কর্মকর্তা অথবা ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যকরী সদস্য পদের জন্য প্রার্থীদের সংখ্যা, গঠনতন্ত্রের বর্ণিত সংখ্যার সমান হলে দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাচন কমিটি সে প্রার্থী বা প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত বলে ঘোষণা করবেন।

জ) ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাচনী কমিটি প্রার্থীদের এজেন্টদের (যদি কোনো এজেন্ট থাকেন) উপস্থিতিতে ভোট গণনা করবে এবং গণনা শেষে মুলতবি দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করবে।

ঝ) কোনো প্রার্থীকে দেয়া কোনো ভোট বাতিল হলে একই ব্যালটপত্রের অন্য প্রার্র্থীদের দেওয়া ভোটের ক্ষেত্রে তা বাতিল বলে গণ্য হবে না।

ঞ) নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরবর্তী ৪৫ দিন পর্যন্ত ব্যালট সংরক্ষণ করা হবে।

ট) উপর্যুক্ত ধারাসমূহে বর্ণিত নেই এমন কোনো জরুরি সমস্যার উদ্ভব হলে নির্বাচনী কমিটি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।